২০২৫ সালে ঈদুল আযহা কত তারিখে হবে ?
২০২৫ সালে ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ৮ জুন, রবিবার। ঈদুল আযহা, যা "কুরবানির ঈদ" নামেও পরিচিত, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বৃহত্তম দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি। এটি ধৈর্য, বিশ্বাস, এবং আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণের প্রতীক। এই দিনটি হজের সমাপ্তি ও কুরবানির সঙ্গে সম্পর্কিত।
ঈদুল আযহার তারিখ নির্ধারণ:
ঈদুল আযহা হিজরি ক্যালেন্ডারের জিলহজ মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয়। জিলহজ মাস ইসলামিক বছরের ১২তম মাস, এবং এই মাসেই হজ পালন করা হয়। হিজরি ক্যালেন্ডার চাঁদের অবস্থানের উপর নির্ভর করে, তাই ঈদুল আযহার সঠিক তারিখ প্রতি বছর বদলে যায়। ২০২৫ সালে, হিজরি ১৪৪৬ সালের জিলহজ মাস শুরু হবে ৩০ মে বা ৩১ মে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে, এবং সেই অনুযায়ী ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ৮ জুন, ২০২৫ তারিখে।
ঈদুল আযহার গুরুত্ব:
ঈদুল আযহা ইসলামের দুটি প্রধান ঈদের মধ্যে একটি, যা হজের শেষ দিনে উদযাপিত হয়। এটি নবী ইব্রাহিম (আঃ) এর আল্লাহর প্রতি তাঁর অসীম আনুগত্য এবং বিশ্বাসের স্মরণে উদযাপিত হয়। কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, আল্লাহ ইব্রাহিম (আঃ)-কে তাঁর প্রিয় সন্তান ইসমাইল (আঃ)-কে কুরবানি করার নির্দেশ দেন। ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য প্রস্তুতি নেন, কিন্তু আল্লাহ তাঁর আনুগত্য দেখে ইসমাইলের পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানি করার আদেশ দেন। এই ঘটনার স্মরণে মুসলিমরা ঈদুল আযহায় পশু কুরবানি করে থাকেন।
কুরবানি এবং উদযাপন:
ঈদুল আযহার মূল আচার হলো পশু কুরবানি। মুসলিমরা সাধারণত উট, গরু, ছাগল বা ভেড়া কুরবানি করেন। কুরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়: এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের জন্য, এবং এক ভাগ দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণের জন্য। কুরবানি করা পশুর মাংস সমাজে সাম্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করে এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সাহায্য করার মাধ্যমে সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে।
ঈদুল আযহার দিনে মুসলিমরা ফজরের নামাজের পর ঈদের বিশেষ নামাজ আদায় করেন, যা সাধারণত খোলা ময়দানে বা ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে খুতবা বা ধর্মীয় বাণী প্রদান করা হয়, এবং এরপর কুরবানি করা হয়। মুসলিমরা একে অপরের সাথে কোলাকুলি করে, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে, এবং দিনটি আনন্দ ও উৎসবের মাধ্যমে উদযাপন করে।
সামাজিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব:
ঈদুল আযহা মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক এবং ধর্মীয় উৎসব। এটি আত্মত্যাগ, আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্যের প্রতীক। এই দিনে মুসলিমরা তাদের ধনসম্পদ থেকে কুরবানি করে আল্লাহর প্রতি তাদের ভালবাসা এবং বিশ্বাস প্রকাশ করে। এছাড়াও, ঈদুল আযহার সময় দরিদ্র ও নিঃস্ব মানুষের মধ্যে মাংস বিতরণ করা হয়, যা সামাজিক সাম্য এবং সহানুভূতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
উপসংহার:
২০২৫ সালে ঈদুল আযহা ৮ জুন তারিখে উদযাপিত হবে। এই দিনটি মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এটি আত্মত্যাগ এবং আল্লাহর প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের একটি বিশেষ স্মরণিকা। ঈদুল আযহার উৎসব মুসলিমদের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ, যা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে আরও মজবুত করে এবং সামাজিক বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে তোলে
0 Comments